নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির খোঁজ মিলেছে
নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির অবস্থান অবশেষে জানা গেছে। তিনি এখনো দেশেই রয়েছেন এবং রাজধানী কাঠমান্ডুর শিবপুরী এলাকায় সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভরত তরুণদের উদ্দেশে তিনি এক লিখিত বার্তা পাঠান। খবর দিয়েছে নেপালি গণমাধ্যম খবর হাব।
বার্তায় অলি নিজের রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিগত বেদনা ও শাসনকালীন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত তরুণদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নে তিনি পরিবার হারালেও একজন বাবা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এখনো জীবিত রয়েছে তার ভেতরে।
অলি স্মরণ করেন ১৯৯৪ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়ের অভিজ্ঞতা। তার দাবি, সে সময় কোনো গুলির ঘটনা ঘটেনি। শান্তির প্রতি নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি অভিযোগ করেন— বর্তমান বিক্ষোভকে কিছু রাজনৈতিক মহল ধ্বংসাত্মক রূপ দিতে তরুণদের ব্যবহার করছে।
তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত। সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা চলছে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য হুমকি।
অলি তার বার্তায় লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরার মতো সীমান্ত ইস্যু নিয়েও কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, নাগরিকদের স্বাধীনভাবে কথা বলা, চলাফেরা ও প্রশ্ন করার অধিকার নিশ্চিত করাই তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য। জনগণের অধিকার ও সংবিধান রক্ষায় তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন।
বর্তমান পরিস্থিতিকে তিনি ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন। তার মতে, তরুণ সমাজের অসন্তোষকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানো হচ্ছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি সতর্ক করে বলেন, তাদের উদ্দেশ্য ন্যায্য হলেও তা রাজনৈতিক অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।
অলি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে মত দেন। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী তরুণদের সহিংসতার পথে ঠেলে দেয়, তবে তা দেশের নিরাপত্তা ও জনগণের কল্যাণের জন্য বিপজ্জনক হবে।
শেষে অলি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ নিশ্চিত করাই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। তার বার্তায় স্পষ্ট হয়— নেপালের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সংবিধান রক্ষায় তিনি এখনো সক্রিয় এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে আগ্রহী।